শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন
ভূঁইয়া কামাল, মুলাদী প্রতিনিধি॥ বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলা ছৈলা, জয়েন্তী, আড়িয়াল খাঁ ও নয়া ভাঙ্গলী নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
ছৈলা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হতে চলছে ভাঙ্গারমোনা গ্রাম। সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। রাস্তা-ঘাট নদীতে ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
১৯৬৮ সাল থেকে ভাঙ্গনের শিকার এ গ্রামটি ১৯৭৭ সালে সম্পূর্ণ নদীতে চলে যায়। নতুন চর জেগে উঠায় নদীভাঙনের শিকার মানুষের সেখানে পুনরায় বসতি তুলেছে ৪০ বছর ধরে। আজ নদীটির তীর ঘেঁষে ভাঙ্গারমোনা, সাতানি, কুতুবপুর ও পৌরসভার ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের প্রায় আট ১০ হাজার লোকের বসবাস।
তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদরাসা ও দু’টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। গ্রামটি থেকে প্রায় চার-পাঁচ শ’ ছাত্রছাত্রী দেড় কিলোমিটার প্রশস্ত ছৈলা নদী খেয়া পারাপারের মাধ্যমে স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় যায় এবং লোকজন হাটবাজারের যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এ এলাকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি ও বসত বাড়ি নদীতে বিলীন হচ্ছে।
গ্রামটির ভেতর দিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক মানুষ মোটরসাইকেল, অটোভ্যান ও নছিমনসহ বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করে। সড়কটি দিয়ে বরিশালের হিজলা, মুলাদী, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ও কাজিরহাট থানার লোকজনকে কালকিনি, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর এবং ঢাকার সাথে যোগাযোগের জন্য ৩০ কিলোমিটার পথ কম ঘুরতে হয়। ফলে খরচ কম হয়।
এলাকার ইউপি সদস্য আলী আহম্মেদ খান, সাবেক ইউপি সদস্য মোকছেদুর রহমান, মাস্টার ফজলুর রহমান শরীফ ও মাস্টার বাচ্চু ভূঁইয়া বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নদী ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা না নিলে ৪০ বছর ধরে গড়ে ওঠা গ্রামের শত শত ঘরবাড়ি, পশ্চিম তেরচর ভাঙ্গারমোনা জামে মসজিদ ও কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে গেছে। অব্যাহত ছৈলা নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে গ্রাম ও সড়কটি রক্ষার জন্য নদীতে সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলানোর আবেদন জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসী।
Leave a Reply